‘ভয়কে জয় করে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেই এগিয়ে যাবে নারী’

সামাজিক বাধাগুলো অতিক্রম করার দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে একজন নারীর। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য লক্ষ্য থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হলে চলবে না। নিজের মধ্যে পেশাদারিত্ব থাকতে হবে। নিজের পথ নিজেকেই তৈরি করতে হবে। সামনে এগুনোর পথ কেউ তৈরি করে দেবে না। কাজের মধ্যে সমস্যা আসবেই। সমস্যার কথা চিন্তা না করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ভয়কে জয় করে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। তাহলে নারীরা এগিয়ে যাবে।
- জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।
ড. লাফিফা জামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ঢাবি'র শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যুক্ত আছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিয়ে গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজি (বিওব্লিউআইটি) এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ফ্লাইং ল্যাবস-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশে রোবট অলিম্পিয়াডের আয়োজক বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সহ-সভাপতি। ড. লাফিফা জামাল বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারীদের ক্যারিয়ার উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা এই রোবট গবেষকের সাথে দীর্ঘ আলাপের বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছে জাগরণ । পাঠকদের জন্য আজ রয়েছে তার শেষ পর্ব।
জাগরণ: সারাদেশে রোবট নিয়ে কাজ করা তরুণ উদ্ভাবকদের অবস্থা নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: শুরুতে আমি বলেছিলাম রোবটিক্স আমাদের দেশে নতুন একটা বিষয়। এটা জেনেও দেশের মেধাবি ও সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্ম চ্যালেঞ্জ হিসাবে বেছে নিচ্ছে রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্সের মতো অ্যাডভান্স সব বিষয়। এটা খুবই আশার কথা। অনেকে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আবার অনেকে দেশে বসেই বেশ ভালো কাজ করছে। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, আমাদের দেশে রোবটিক্স, অ্যাম্বেডেড সিস্টেম, অটোমেশন ও আইসি ফ্যাব্রিকেশনের জন্য এখনো পর্যন্ত তেমন
কোনো ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি নেই। যে কারণে চায়না, জাপান, কোরিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো থেকে আমদানি করতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রোডাক্ট। নিজস্ব ডিজাইন তৈরি করে তা ম্যানুফাকচার করতে হয় চায়না থেকে, যা অনেক ব্যয়বহুল। সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্ভাবনী ও আইডিয়া ফান্ড থেকে এসব কাজে অনুদান দেয়া হচ্ছে। কিন্তু অনুদানের পরিমাণ অনেকের গবেষণা বা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয়।
জাগরণ: ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্রোঞ্জপদক অর্জন করছে। এই সাফল্যে আপনার অনুভূতি কেমন?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: আসলে যে কোনো অর্জনের অনুভূতিই আনন্দের। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনছে। এটা তো আরো আনন্দের। একেবারে ভিন্ন রকমের অনুভূতি।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে একটি স্বর্ণ, একটি কারিগরি ও ২টি হাইলি কমেন্ডেড পদক লাভ করে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ দল একটি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য, ৬টি তাম্র এবং ১টি কারিগরি পদক লাভ করে। ২০২০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ২২তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে অনলাইনে বাংলাদেশ দল অংশগ্রহণ করে অর্জন করে ২টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য, ৫টি ব্রোঞ্জ ও ৬টি কারিগরি পদক। ২০২১ সালে চারটি স্বর্ণ, দুইটি রৌপ্য, পাঁচটি ব্রোঞ্জ ও চারটি কারিগরি পদক জিতেছে বাংলাদেশ দল। যতদিন যাচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভালো করছে। বিশ্বের প্রযুক্তি সফল দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে স্বর্ণ জিতে আনছে। আশাকরি আগামীতেও আমাদের শিক্ষার্থীরা আরো ভাল করবে।
জাগরণ: জেনেছি আপনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক বই লেখার কাজে যুক্ত ছিলেন। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই জেনেছেন। আমি ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক বই লেখার সাথে যুক্ত আছি।
২০২১ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নতুন যে শিক্ষানীতি সেটার বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিটা বিষয়েই নতুন বই আসছে, যা ২০২৩ সাল থেকে সারাদেশে কার্যকর হবে। ক্লাস সিক্স থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে প্রতি বছরে একটা করে ক্লাস যুক্ত হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বইটাই সম্পূর্ণ নতুন ধারায় লেখা হয়েছে। আমরা নরমালি গদবাধা একটা মুখস্তনির্ভর বই বা মুখস্তনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থায় অভ্যস্ত। সেখানে পুরো অ্যাক্টিভিটি বেইজড বই করেছি। এখানে আপনাকে একটা লাইনও মুখস্ত করতে হবে না।
প্রত্যেকটা বিষয় আপনি হাতে-কলমে শিখবেন। বইটি ঢাকার একটা শিক্ষার্থী যেমন পড়বে, তেমনি পড়বে পার্বত্য এলাকা, হাওর এলাকা বা অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীরাও। তাই বইটি লেখার সময় আমাদের মাথায় রাখতে হয়েছে যে, দেশের সব এলাকায় সব ধরণের ডিজিটাল প্রযুক্তি নেই। সবার কাছে সব ডিভাইসও নেই। তাই বইটিতে কোন ডিভাইস নির্ভরতা রাখা হয়নি। প্রযুক্তির নীতিগত দিকগুলোও সহজ উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বইটি এখন সারাদেশের ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং পর্যায়ে রয়েছে। সেইসাথে জীবন ও জীবিকা নামের আরেকটি নতুন বিষয় শুরু হতে যাচ্ছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা নিতে পারবে। তার মধ্যে রোবটিক্স আছে। সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি।
জাগরণ: আপনি তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের ক্যারিয়ারভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন। আপনার দৃষ্টিতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্যারিয়ারে নারীদের সম্ভাবনা কেমন?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিয়ে গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ ওমেন ইন টেকনোলজি (বিওব্লিউআইটি) এর সভাপতি এবং নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে ক্যারিয়ারভিত্তিক সংগঠন বাংলাদেশ ওপেন
সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘদিন ধরে এসব কার্যক্রমের সাথে সরাসরি যুক্ত আছি। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি।
তথ্যপ্রযুক্তি এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে মূলত মস্তিষ্ক দিয়ে কাজ করতে হয়। এখানে শারীরিক শক্তি দেখিয়ে কাজ করার উপায় নেই। এটা ছেলেদের আর এটা মেয়েদের কাজ, এরকম বিভাজনের কোনো সুযোগ নেই।
বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামার একজন নারী, যার নাম লেডী এডা লাভলেস। ফেসবুকের প্রধান অপারেটিং অফিসার শেরিল কারা স্যান্ডবার্গ। গিটহাবের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ওপেন সোর্স প্রজেক্টে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের প্রোগ্রামিং কোড গৃহীত হওয়ার হার বেশি।
কাজেই তথ্যপ্রযুক্তি ক্যারিয়ারে নারীদের সম্ভাবনা পুরুষের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। মনোবলের অভাব এবং প্রযুক্তিভীতির কারণেই মেয়েরা সাধারণত পিছিয়ে যায়। এই ভীতি জয় করতে পারলেই তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীরা ভালো করবে।
জাগরণ: দেশের অসংখ্য নারী উদ্যোক্তা ক্যারিয়ার হিসেবে অনলাইন প্লাটফর্মকে বেছে নিচ্ছে। নারীদের সাইবার নিরাপত্তায় কোন বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন কী-না?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্তৃতির কারণে এখন আমাদেরকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। বিশেষ করে এখন নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য অনলাইন প্লাটফর্মকে বেছে নিচ্ছে।
অনলাইনে নিজের তৈরি পণ্য বিক্রি করে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে সংসারেও অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখছে। নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করছে। অনলাইনে ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক সময় নারীরা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়েও নানান সাইবার বুলিং-এর শিকার হয়। নারীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকির। তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি হয়রানিও হতে হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে কীভাবে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়, সে ব্যাপারে যদি নারীদের আমরা দক্ষ ও সচেতন করতে পারি, তাহলে তারা অনেক রকমের ঝামেলা এড়িয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। অনলাইনে নারীদের প্রতি যে সহিংসতা হচ্ছে, তা প্রতিরোধে করণীয় এবং কেউ সহিংসতার শিকার হলে কী করতে হবে এ বিষয়ে আমরা অনলাইন ও অফলাইনে বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজন করি।
জাগরণ: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের উপরে ওঠার পেছনে কী প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য করছেন?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: অন্য আর দশটা পেশার মতো এক্ষেত্রেও আমাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক বাধা মূলত নারীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে। এটা শুধু তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নয়, সব ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে একই সমস্যা। একজন পুরুষ যত সহজে তার ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে, একজন নারীর পক্ষে তা অতটা সহজ নয়। নারীকে বেশ কিছু সামাজিক-পারিবারিক-মানসিক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়।
তাই অনেক সময় তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে সফলভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করা মেধাবী ছাত্রীদের আমরা অকালে ঝরে যেতে দেখি। নারীদের ঘরে-বাইরে দুদিকে সামলাতে হয়। এ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। বাড়ির পুরুষ সদস্যদেরও ঘরের কাজে অংশগ্রহণ করা দরকার। সঠিকভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে এবং পরিবারের সদস্যদের সহায়তা পেলে একজন নারী দুদিক সামলেই সামনে এগিয়ে যেতে পারে। যে কোনো সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে না দেখে পজেটিভ মনোভাব নিয়ে এর মধ্যে থেকে কীভাবে বের হবে তা খুঁজে এগিয়ে যেতে হবে।
জাগরণ: নারীরা প্রতিনিয়ত ইন্টারনেট প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় আছে কী?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: এখন আমার হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র স্মার্টফোন, ল্যাপটপ। এই স্মার্টফোন আমি ভালো কাজে ব্যবহার করতে পারি, আবার খারাপ কাজেও। এই ফোন ব্যবহার করে কারো বিপদ হলে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারছি। আবার একই ফোন দিয়ে নারীকে হয়রানিও করছি। এটা তো প্রযুক্তির দোষ না। দোষ আমাদের মানসিকতার। সুশিক্ষা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক সচেতনতা- এই তিনই পারে আমাদের রক্ষা করতে। পাশাপাশি মেয়েদেরকেও সচেতন হতে হবে। নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার শিখতে হবে। নিজের অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। প্রাইভেসি বজায় রাখতে হবে।
জাগরণ: চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগের নারীদের প্রতি আপনার মেসেজ কী?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: আমরা এখন আছি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়ে। জীবন-যাপনের ধরন, শিক্ষায়, কর্মক্ষেত্রে সব দিকে নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। এখনকার যুগে নারীদের খুব বেশি আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। নারী-পুরুষ সবাইকেই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা বজায় রেখে, সঠিক পরিকল্পনা করে পেশাদারিত্বের সাথে নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নারীর মেধা কোনো অংশেই পুরুষদের চেয়ে কম নয়। সেই মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালেই জীবনে সফলতা আসবে।
জাগরণ: কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান?
অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল: আমি অনেক আশাবাদী মানুষ। বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময় একটা দেশ। এ দেশকে সোনার বাংলা রূপে গড়ে তোলার জন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই দেশটাকে আমি এমনভাবে দেখতে চাই যেখানে প্রত্যেকে নিজের জায়গায় সৎ থেকে কাজ করবো। আপনি যদি নিজে সৎ থেকে নিজের কাজটা করেন, তাহলে আমরা কিন্তু স্বপ্নের দেশ পেয়ে যাবো। আর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ তখনই হবে যখন আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গায় সৎ থেকে নিজের কাজকে ভালোবাসব।